ভিলেজ কাউন্সিল নির্বাচনে প্রদ্যুতের নয়া ট্রাম কার্ড পুষ্পবন্দ প্রাসাদ
ভিলেজ কাউন্সিল নির্বাচন ঘনিয়ে আসতেই পুষ্পবণত প্রাসাদ ইস্যুতে মাঠে নামল প্রদ্যুৎ ও তার দল।
দ্য ফ্যাক্ট :- গ্রেটার তিপ্রা ল্যান্ড এবং ওয়ান লাস্ট ফাইট এখন মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে। সামনে ভিলেজ কাউন্সিল নির্বাচন। তাই নতুন ইস্যু নিয়ে মাঠে নেমেছেন প্রদ্যুৎ। পুষ্পবন্ত প্রাসাদকে হোটেল না বানানোর দাবিতে প্রদ্যুৎ-র দলের বিভিন্ন শাখা সংগঠন সরাসরি আন্দোলনে নেমেছে। অথচ প্রদ্যুৎ নিজেই রাজপ্রাসাদের বিভিন্ন অংশসহ রাজন্য সম্পত্তি ব্যবহার করে বিয়ে বাড়ি থেকে শুরু করে কফি শপ চালু করেছেন। এ নিয়ে দলের নেতাকর্মীরা নীরব।
প্রদ্যুৎ বিক্রম মানিক্য দেববর্মা কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে তিপ্রা মথা দল গঠন করার পর প্রতিটি নির্বাচনের আগে বিভিন্ন ইস্যু সামনে এনেছেন। কখনো গ্রেটার তিপ্রা ল্যান্ড, আবার কখনো ওয়ান লাস্ট ফাইট। যদিও কংগ্রেসে থাকাকালীন সময়ে "পৈলা জাতি উল পার্টি" স্লোগান দিয়েছিলেন তিনি। মথা গঠিত হওয়ার পর গ্রেটার তিপ্রা ল্যান্ড এবং ওয়ান লাস্ট ফাইট-এর জিগির তুলে বেশ কিছু নির্বাচনে সাফল্য পেয়েছেন। বর্তমানে আসন্ন ভিলেজ কাউন্সিল নির্বাচনে নতুন ইস্যু হিসেবে বেছে নিয়েছেন পুষ্পবন্ত প্রাসাদকে।
রাজ্য সরকার তাজ গ্রুপের হাতে পুষ্পবন্ত প্রাসাদ তুলে দিয়ে সেখানে একটি পাঁচতারা হোটেল নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, প্রাসাদের ঐতিহ্য এবং সৌন্দর্য অক্ষুণ্ণ রেখেই এই হোটেল নির্মাণ করা হবে, যা রাজ্যের মানুষের কল্যাণে আসবে। অন্যদিকে প্রদ্যুৎ দলবল নিয়ে সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করছেন।
রবিবার টিডব্লিউএফ সাংবাদিক সম্মেলন করে সরকারের এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের দাবি জানায়। পাশাপাশি, আগামী ৪ তারিখে পুষ্পবন্ত প্রাসাদে হোটেল নির্মাণের বিরোধিতায় গণঅবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে দল। প্রদ্যুৎ নিজেও সামাজিক মাধ্যমে সরকারের এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে বলেছেন, রাজন্য আমলের স্মৃতি যেন নষ্ট না হয়।
তবে প্রশ্ন উঠছে, সরকার রাজপ্রাসাদে হোটেল নির্মাণের যে উদ্যোগ নিয়েছে, তার পথপ্রদর্শক কে? একটু পেছনে তাকালে দেখা যায়, ত্রিপুরার রাজপ্রাসাদে সর্বপ্রথম বিয়ে বাড়ি বানিয়েছেন প্রদ্যুৎ বিক্রম মানিক্য দেববর্মা। চন্দ্রমহলে বিয়ে বাড়ি দিয়ে যাত্রা শুরু করেন তিনি। এরপর একে একে মানিক্য কোট, গোলাপবাগান, রাজবাড়ীর অন্দরে কফি শপ, দ্য মানিক্য এনক্লেভ, মালঞ্চ নিবাস ইত্যাদি স্থানে বিয়ে বাড়ি বানিয়ে ব্যবসা শুরু করেছেন।
অর্থাৎ রাজন্য সম্পত্তি ব্যবহার করে বাণিজ্যিকভাবে অর্থ উপার্জনের রাস্তা প্রদ্যুৎ নিজেই ত্রিপুরায় তৈরি করেছেন। এখন রাজ্য সরকার পুষ্পবন্ত প্রাসাদে হোটেল নির্মাণের পরিকল্পনা করলে কেন তিনি বিরোধিতা করছেন? তিপ্রা মথা দলের ভেতরে কেউ কি এই দ্বিচারিতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার সাহস রাখে?
সচেতন মহলের দাবি, প্রদ্যুৎ যদি সত্যিই পুষ্পবন্ত প্রাসাদের ঐতিহ্য রক্ষায় আন্তরিক হন, তাহলে প্রথমে তার নিজস্ব বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো রাজন্য সম্পত্তি থেকে সরিয়ে নেওয়া উচিত। এরপর আন্দোলন করলে তার নৈতিকতা এবং যৌক্তিকতা আরও গ্রহণযোগ্য হবে মানুষের কাছে। তবে এটা স্পষ্ট, আসন্ন ভিলেজ কাউন্সিল নির্বাচনে প্রদ্যুৎ পুষ্পবন্ত প্রাসাদ ইস্যুকে ট্রাম্প কার্ড হিসেবে ব্যবহার করবেন।
What's Your Reaction?