পুষ্পবন্ত প্রাসাদ নিয়ে বিতর্ক,YTF-র আন্দোলন নিয়ে প্রশ্ন?
পুষ্পবন্ত প্রাসাদকে সরকার হোটেল করার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে পথ অবরোধ ওয়াইটিএফএর। ডেপুটেশন প্রদান পর্যটন দপ্তরে।
দ্যা ফ্যাক্ট :- রাজ্য সরকারের অধীন থাকা পুষ্পবন্ত প্রাসাদকে বেসরকারি সংস্থার হাতে তুলে দেওয়ার বিরোধিতায় মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে পথ অবরোধে বসলো ওয়াইটিএফ। ডেপুটেশন প্রদান করা হয়েছে পর্যটন দপ্তরের অধিকর্তার নিকট। অথচ সরকারের তরফে এই ধরনের কোন সিদ্ধান্ত এখনো প্রকাশ্যে আসেনি। ফলে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে আন্দোলনের নৈতিকতা নিয়ে।
রাজন্য আমলের একটি ঐতিহ্যবাহী স্থান পুষ্পবন্ত প্রাসাদ। ১৯১৭ সালে মহারাজা বীরেন্দ্র কিশোর মানিক্য এই প্রাসাদ নির্মাণ করেছিলেন। ত্রিপুরাতে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর এই প্রাসাদ থেকে রাজভবন হিসেবে ব্যবহার করে আসছে রাজ্য সরকার। কয়েক বছর আগে রাজভবন এই স্থান থেকে স্থানান্তর হয়েছে। তারপর থেকেই এই প্রাসাদের মেরামতির কাজ চলছে।
কিন্তু সম্প্রতি এই প্রাসাদকে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের হাতে তুলে দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে বলে দাবি করতে শুরু করেছে ওআইটিএফ। এমনকি তিপ্রামথা দলের প্রতিষ্ঠাতা প্রদ্যুৎ বিক্রম মানিক্য দেববর্মা নিজেও দাবি করেছেন "সরকার যাতে এই প্রাসাদ থেকে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের হাতে ফাইভ স্টার হোটেল নির্মাণের জন্য হস্তান্তর না করে"। এদিকে ওয়াইটিএফ এই দাবিতে প্রতিদিন আন্দোলন করে যাচ্ছে। অথচ সরকারের তরফে এখন পর্যন্ত এ ধরনের সিদ্ধান্তের কোন ঘোষণাই করা হয়নি। ফুলের স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে এই আন্দোলন তাহলে কিসের উপর ভিত্তি করে করা হচ্ছে? ওয়াইটিএফ দাবি করেছে তার জন্য আমলের যে সমস্ত ঐতিহ্যবাহী স্থান রয়েছে ত্রিপুরাতে সেগুলো যাতে সরকার নষ্ট না করে। কারণ এর সাথে ত্রিপুরার সংস্কৃতি ঐতিহ্য জড়িত রয়েছে। ওয়াইটিএফ এর এই দাবি অত্যন্ত যুক্তিসঙ্গত। এই ধরনের ঐতিহ্যবাহী স্থানগুলোকে আরো সুন্দরভাবে সংরক্ষণ করতে সরকারকে আরো যত্নশীল হওয়া দরকার।
অন্যদিকে প্রদ্যুৎ বিক্রম মানিক দেববর্মার হাতে রাজন্য আমলের যে সম্পদ রয়েছে সেগুলিতে বিভিন্ন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান খোলা শুরু করেছেন তিনি। যেমন চন্দ্র মহলে বিয়ে বাড়ি, গোলাপ বাগানে বিয়ে বাড়ি, মানিক্য কোটে বিয়ে বাড়ি, অত্যন্ত ঐতিহ্যবাহী এবং রবীন্দ্রনাথের সাথে স্মৃতি জড়িত মালঞ্চ নিবাসী বিয়ে বাড়ি, ভোলাগিরিতে বিয়ে বাড়ি, রাজবাড়ীর একটি অংশে কফি শপ, উত্তর গেট সংলগ্ন রাজের না আমলের বিল্ডিং মেরামত করে ব্যবসার জন্য স্টল নির্মাণ সহ বিভিন্ন স্থানে রাজন্য আমলের সম্পদ বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করছে প্রদ্যুৎ বিক্রমানি কর দেববর্মা। এই সম্পদ গুলো রাজন্য আমলে তৈরি করা অথবা জমি অধিগ্রহণ করা। কিন্তু প্রদ্যুৎ নিজের অর্থ রোজগারের স্বার্থে সম্পদ গুলোকে ব্যবহার করছে। এই জায়গায় দাঁড়িয়ে ওয়াইটিএফের উচিত প্রদ্যুতের এই ব্যবসা বন্ধের দাবিতে সরব হওয়া। অন্যদিকে প্রদ্যুত সরকারের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এনেছেন সেই অভিযোগের পূর্বে, রাজন্য আমলের সম্পদ ব্যবহার করে ব্যবসা থেকে সরে আসা উনার নৈতিক দায়িত্ব। অন্যদিকে যে বিষয়ে সরকারি কোন ধরনের ঘোষণা দেওয়া হয়নি সেই বিষয়ে ওয়াইটিএফ এবং প্রদ্যুৎ সরব হওয়া নিয়ে জনমনে সন্দেহ দেখা দিয়েছে।
আজ মুখ্যমন্ত্রী বাড়ির সামনে পথ অবরোধ করা হয়েছে ওয়াইটিএফের তরফে। পাশাপাশি আস্তাবল ময়দান থেকে একটি রেলি করে পর্যটন দপ্তরের অধিকর্তার নিকট দেওয়া হয়েছে ডেপুটেশন। দাবি পূরণ না হলে আরও বৃহত্তর আন্দোলন করার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে এই কর্মসূচি থেকে।
What's Your Reaction?