দেশের ভবিষ্যত বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছে স্পিকার শুনে, প্রশ্নের মুখে ADC-র শিক্ষা ব্যবস্থা?
বিদ্যালয়ে একজন শিক্ষক, তাই ব্লুটুথ স্পিকার বাজিয়ে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাদানের কৌশল নিলেন শিক্ষক। অধরা আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থা।
সুমন মহালনবীশ,দ্যা ফ্যাক্ট:-বিদ্যালয়ের শিক্ষাদান করার ক্ষেত্রে এক অভিনব দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো শিক্ষক মশাই। শিক্ষার্থীদের বিনা শিক্ষকে সাউন্ড সিস্টেম বাজিয়ে পাঠ দেওয়া হল সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। শিক্ষার্থীরা এই সুযোগে কেউ খেলায় ব্যস্ত আবার কেউ বসে মাস্টারমশায়ের কণ্ঠস্বরের সাথে সুর মিলাচ্ছেন। বিদ্যালয়ে মাত্র এক জন শিক্ষক থাকায় এই পন্থা অবলম্বন করা হয়েছে বলে জানা গেছে। ঘটনা কিল্লা ব্লকের অন্তর্গত টিটিএএডিসি প্রশাসনের অধীন উলুপাড়া জেবি স্কুলে।
প্রত্যন্ত এলাকায় একাংশ সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লাটে উঠেছে শিক্ষা ব্যবস্থা। এই এলাকার অনেক শিক্ষার্থীরা হয়তো আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থা শব্দটি কখনোই শুনেনি। বেশিরভাগ দরিদ্র এবং সাধারণ ঘরের ছেলেমেয়েরা সরকারের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উপর এখনো সরাসরি নির্ভর। কিন্তু এখনো প্রত্যন্ত এলাকার একাংশ সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে যে ধরনের ঘটনা সামনে আসছে তাকে কেন্দ্র করে গোটা শিক্ষা ব্যবস্থা কলঙ্কিত হচ্ছে। এক সময় রাজ্যে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপকে কেন্দ্র করে প্রক্সি শিক্ষকদের বেশ রমরমা ছিল। বর্তমানে সেগুলো অতীত।
কিন্তু অত্যন্ত স্পর্শকাতর এবং চূড়ান্ত পর্যায়ের প্রশাসনিক গাফিলতির এক দৃশ্য ইতিমধ্যেই সামনে চলে এসেছে। কিল্লা আরডি ব্লকের অন্তর্গত কাঁচিগাঙ এডিসি ভিলেজ এলাকার উলুপাড়া জেবি স্কুল। এই বিদ্যালয়ের হাল একেবারে সূচনীয়। টিটিএএডিসি প্রশাসনের অধীন রয়েছে এই বিদ্যালয়টি। শিক্ষার্থীরা নিয়মিত বিদ্যালয় আসছে। কিন্তু নেই শিক্ষক-শিক্ষিকা। যে এক জন শিক্ষক আসছেন তিনিও সাউন্ড সিস্টেমের মাধ্যমে শিক্ষাদান করছেন ছেলে মেয়েদের। প্রতিদিন এই শিক্ষক মশাই বাড়ি থেকে ক্লাসরুমের পড়াশোনা রেকর্ডিং করে আনেন বিদ্যালয়ে। এই রেকর্ডিং ব্লুটুথ স্পিকারের চালিয়ে এক শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের সামনে বসিয়ে দিয়ে অন্য শ্রেণীতে জান ক্লাস নিতে।রেকর্ডিং শুনেই শিক্ষার্থীরা গলা মেলাচ্ছে। আবার কেউ কেউ ব্যাট নিয়ে খেলায় ব্যস্ত। কিউ বা হামাগুড়ি খাচ্ছে।
আশ্চর্যের হলেও সত্য এই ছেলেমেয়েদের উদ্দেশ্য করেই বলা হয় "তাঁরা দেশের ভবিষ্যৎ"। কিন্তু ভারতের ভবিষ্যৎ যখন মাটিতে বসে ব্লুটুথ স্পিকারের মাধ্যমে লেখাপড়া করতে হয় তখন ভারতের ভবিষ্যতের সামনে ঘোর বিপদ তা কিন্তু স্পষ্ট। প্রশ্ন উঠছে সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই ধরনের খামখালী আগামী দিনে ছেলে-মেয়েদের কোন জায়গায় নিয়ে দাঁড় করাবে? সরকারের উচিত এই ঘটনাকে একটি লজ্জা জনক দৃষ্টান্ত হিসেবে ধরে নিয়ে প্রত্যন্ত এলাকার সমস্ত বিদ্যালয়গুলোতে পঠন পাঠন এবং প্রশাসনিক বিষয়ে বিশেষ নজর দেওয়া।
What's Your Reaction?