দুর্যোগ মোকাবেলায় নরসিংগড় উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় মহড়া, প্রয়োজন মহড়ায় ঘটে যাওয়া ভুল সংশোধনের
নসিংগড় স্কুলে দুর্যোগ মোকাবেলায় শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ ছিল স্বতঃস্ফূর্ত
দ্যা ফ্যাক্ট অফ ত্রিপুরা :-মোহনপুর মহকুমা প্রশাসনের উদ্যোগে ডিজেস্টার ম্যানেজমেন্টের উপর মগড্রিল অনুষ্ঠিত হয় নরসিংগড় উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়। এদিন দুর্ঘটনার চিত্রনাট্য তৈরি থেকে দুর্ঘটনা মোকাবেলায় যা যা করণীয় সমস্ত বিষয়ে হাতে-কলমে বাস্তবায়িত করা হয়। যাতে করে শিক্ষার্থীরা এই ধরনের বাস্তব পরিস্থিতিতে মোকাবেলা করে টিকে থাকতে পারে।
নিয়ম মেনে প্রতিবছর মহকুমা প্রশাসনের উদ্যোগে ডিজেস্টার ম্যানেজমেন্টের উপর মকড্রিল অনুষ্ঠিত হয়। এদিন নরসিংগড় উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই মক ড্রিলে শিক্ষার্থীরা দারুণভাবে অংশগ্রহণ করেছে। এদিন মহড়া করা হয়েছে কিভাবে আহত রোগীদের উদ্ধার করতে হয়, আগুন নেভাতে হয় এবং চিকিৎসা পরিষেবা প্রদান করতে হয়। এই মহড়ায় বিএসএফ, টিএআর, যথেষ্ট ভালো কাজ করেছে এইদিন। মহকুমা প্রশাসক সুভাষ দত্ত বলেন বিদ্যালয় স্তরে ছেলেমেয়েদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং তাদেরকে দুর্যোগ মোকাবেলায় হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দিতেই এই ধরনের কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
বিগত দুইদিন ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্টের উপর বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছিল বলে জানান মহকুমা শাসক। এরমধ্যে ডিজেস্টার ম্যানেজমেন্টের একদিনের প্রশিক্ষণ ছিল অন্যতম। তবে এদিনের মহড়ায় বেশ কিছু ত্রুটি সামনে এসেছে।
১) ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্টের বার্তা বিদ্যালয়ে প্রচার করার জন্য প্রধান শিক্ষিকা পূর্বে থেকেই প্রস্তুত রাখা বিদ্যালয়ের লাউড স্পিকার ব্যবহার করেছেন। অথচ বড় ধরনের ডিজিস্টার হলে বিদ্যুৎতের প্রয়োগ বা লাউড স্পিকার ব্যবহার করা প্রায় অসম্ভব। প্রয়োজন ছিল খালি গলায় অথবা মেগা ফোন স্পিকার ব্যবহার করা।
২) দুর্ঘটনার পর বিদ্যালয়ের দক্ষিণ প্রান্তের শ্রেণিকক্ষ থেকে শিক্ষার্থী এবং শিক্ষক-শিক্ষিকারা বেরিয়ে আসার সময় লাইনের শেষের অংশে দুজন শিক্ষিকা মাথায় কোন ব্যাগ অথবা হাত না দিয়ে বেরিয়ে এসেছেন।উচিত ছিল মাথায় অন্তত দুটি হাত দিয়ে বেরিয়ে আসার। উনাদের এই ভুল শিক্ষার্থীদের কাছে ভুল বার্তা নিয়ে যাবে।
৩) দমকল বিভাগের কর্মীরা মহরার অঙ্গ হিসেবে আগুন নেভাতে এসে সিঁড়ি দিয়ে ছাদে উঠেছেন। আবার ছাদ থেকে অসুস্থ রোগীকে কাঁধে নিয়ে নিচে এসেছেন। কিন্তু উনাদের মাথায় ছিল না সেফটি হেলমেট। যার ফলে উনারা আহত হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। প্রয়োজন ছিল নিজের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করে অন্যদের নিরাপত্তা প্রদান করা।
৪) ত্রিপুরা পুলিশ থেকে ডিজেস্টার ম্যানেজমেন্টের এই কর্মসূচিতে যারা অংশ নিয়েছেন এর মধ্যে একজন মহিলা কনস্টেবল সালোয়ার পড়া অবস্থায় পায়ে স্লিপার পরে এই কর্মসূচিতে এসেছেন। ছিলনা মাথায় টুপি, নেই নিমপ্লেট। প্রয়োজন ছিল সু জুতা থেকে শুরু করে নেমপ্লেট এবং টুপি ব্যবহার করা।
৫) বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ফার্স্ট এইড করার সময় ঔষধের পরিবর্তে আলতা ব্যবহার করেছে। যা কোনোভাবেই উচিত হয়নি। প্রয়োজন ছিল এই ধরনের পরিস্থিতিতে কি ধরনের ঔষধ ব্যবহার করতে হয় তা হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দেওয়ার।
৬) মহড়া চলাকালীন সময়ে বৃষ্টি আসে। এই বৃষ্টিতে যারা অসুস্থ রোগী হিসেবে মহড়া করেছিল সেই শিক্ষার্থীরা দৌড়ে গিয়ে বারান্দায় আশ্রয় নেয়। প্রয়োজন ছিল এই ধরনের দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতিতে অসুস্থ রোগীদের কিভাবে বৃষ্টি থেকে সরিয়ে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়া যায় সে বিষয়টি হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ প্রদানের।
৭) শিক্ষার্থীরা তাঁদের সহপাঠীকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করার পর নিরাপদ স্থানে এনে এলোমেলো অবস্থায় শুইয়ে দিয়েছে। যাতে করে তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান, হাঁটাচলা এবং বেশি সংখ্যক রোগীকে শোয়ানোর ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি হয়েছে। প্রয়োজন ছিল সাড়ি বদ্ধ ভাবে রোগীদের শোয়ানো এবং প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করা।
এই ধরনের মহড়ায় এই সমস্যাগুলো যদি এড়ানো যায় তাহলে আগামী দিনে দুর্যোগ মোকাবেলায় রাজ্য অনেকটাই শক্তিশালী হবে।
What's Your Reaction?