সিদ্ধেশ্বরী মায়ের মন্দিরের উদ্বোধন করলেন উত্তর প্রদেশ এবং ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীরা

বড় কাঁঠালে শান্তি কালী আশ্রমে নবনির্মিত সিদ্ধেশ্বরী মন্দিরের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন সম্পন্ন।

Sep 16, 2024 - 22:33
Sep 16, 2024 - 22:58
 0  27
সিদ্ধেশ্বরী মায়ের মন্দিরের উদ্বোধন করলেন উত্তর প্রদেশ এবং ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীরা
সিদ্ধেশ্বরী মায়ের মন্দিরের উদ্বোধনী পর্বের আনুষ্ঠানিক সূচনা করছেন উত্তর প্রদেশ ও ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী সহ অন্যান্যরা।ছবি:- নিজস্ব

দ্যা ফ্যাক্ট :- যোগী আদিত্যনাথ এবং প্রফেসর ডক্টর মানিক সাহার হাত ধরে উদ্বোধন হলো সিদ্ধেশ্বরী মন্দিরের। বড় কাঁঠালে শান্তিকালী আশ্রমে নবনির্মিত সিদ্ধেশ্বরী মন্দিরের উদ্বোধনী লগ্নে রাজ্য এবং বহিরাজ্য থেকে হাজার হাজার ভক্ত সমবেত হয়েছেন এই দিন। সিদ্ধেশ্বরী মায়ের জয়ধ্বনিতে মুখরিত হয়েছে গোটা মন্দির প্রাঙ্গণ।

১৯৯৫ সালে বড় কাঁঠালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল শান্তিকালী আশ্রম। বহু ঘাত-প্রতিঘাত সহ্য করে এই ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে রয়েছে। যার ফলস্বরূপ মহাধুমধামে উদ্বোধন হলো সিদ্ধেশ্বরী মন্দিরের। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী উদ্বোধনী মঞ্চে ৩৫ বছরকে কটাক্ষ করে বলেন, ওই সময়টাতে রাজ্যে নাস্তিকতার পরিবেশ ছিল। ভগবান আছেন কি নেই তা বোঝার কোনো উপায় ছিল না। কিন্তু কেন্দ্রে মোদি সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর এই পরিস্থিতির পরিবর্তন শুরু হয়েছে। আস্তিকতার পরিবেশ ফিরে এসেছে। আমরা উনার সাথে চেষ্টা করছি। সোমবার সিদ্ধেশ্বরী মন্দিরের উদ্বোধনী মঞ্চে এইভাবেই সম্বোধন করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডক্টর মানিক সাহা। এই মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বিগত দিনে রাজ্যের একটি অস্থির পরিস্থিতি ছিল। বন্দুকের নলের ওপর এই অস্থিরতা সৃষ্টি করা হয়েছিল। একাধিক প্রজন্ম এই অস্থিরতার কারণে রাজ্য এবং রাষ্ট্রের উন্নয়নে কোনো ভূমিকা নিতে পারেনি। বর্তমান সরকার এই পরিস্থিতির শুধু পরিবর্তন করেনি, স্থায়ী পরিবর্তনের পথে হাঁটছে। মুখ্যমন্ত্রী আরও আহ্বান করেন, পর্যটকরা ত্রিপুরা সুন্দরী মন্দির, কসেশ্বরী মন্দিরে যেভাবে যান, সেভাবে সিদ্ধেশ্বরী মন্দিরেও পর্যটকদের কাছে একটি আশ্রয়স্থল হতে পারে।

অন্যদিকে, উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বলেন, ত্রিপুরাতে অভূতপূর্ব উন্নয়ন যজ্ঞের পাশাপাশি ধর্মের দুর্দান্ত বিকাশ হচ্ছে। শ্রীনাথ ধর্মীয় উপমা টেনে বলেন, "আপনি ধর্মের রক্ষা করলে, ধর্ম আপনাকে রক্ষা করবে"। আমরা সবাই গোটা ভারতবর্ষে উত্তর থেকে দক্ষিণ, পূর্ব থেকে পশ্চিম, এক ভারত মজবুত ভারত তৈরির জন্য কাজ করছি। দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির চিন্তা এবং উনার নেতৃত্ব আমাদেরকে একটি নতুন ভারতের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। শান্তিকালী মহারাজের হত্যার প্রসঙ্গ টেনে আদিত্যনাথ বলেন, শ্রীকৃষ্ণের এক হাতে বাঁশি ছিল, অপর হাতে ছিল সুদর্শন চক্র। এই দুটি বিষয় মাথায় রেখে চললে আগামী দিনে আর কোনো শান্তিকালী মহারাজকে আত্মবলিদান দিতে হবে না। যোগী আদিত্যনাথ সিদ্ধেশ্বরী মন্দিরের উদ্বোধনী মঞ্চে আরও বলেন, শান্তিকালী মহারাজ যে মহৎ কাজ শুরু করেছিলেন, বর্তমানে চিত্য মহারাজ সেই কাজের বাস্তবায়ন করছেন। আর সেজন্যই দেশের সরকার উনাকে সম্মান জানিয়েছেন। এদিন মন্দিরের উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে রাজ্য এবং বহিরাজ্য থেকে ব্যাপক সংখ্যক ভক্ত সমাগম হয়েছিল শান্তিকালী আশ্রমে।

এদিন ধন্যবাদসূচক বক্তব্য রাখতে গিয়ে চিত্য মহারাজ বলেন, উনার গুরু প্রয়াত হওয়ার আগে বলে গিয়েছিলেন, তিনি প্রয়াত হলে ত্রিপুরাতে তাকে কেউ সহযোগিতা করবে না। তাকে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের কাছে আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। বাস্তবে শান্তিকালী মহারাজ প্রয়াত হওয়ার পর তার ওপর সন্ত্রাসবাদীরা গেরুয়া বসন ছাড়ার জন্য হুলিয়া জারি করেছিল। অপহরণ করেছিল তার ভাইকে। গেরুয়া বসন না ছাড়লে গুলির নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তখন বিশ্ব হিন্দু পরিষদ তাকে রক্ষা করে এবং লালকৃষ্ণ আদবানীর সহযোগিতায় তিনি ত্রিপুরাতে নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে কাজ শুরু করতে পেরেছিলেন। সেজন্য বিশ্ব হিন্দু পরিষদকে এই মঞ্চ থেকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি।

এই মঞ্চে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন তিপ্রামথা দলের প্রতিষ্ঠাতা প্রদ্যুৎ বিক্রম মানিক্য দেববর্মা, সাংসদ বিপ্লব কুমার দেব, রাজীব ভট্টাচার্য, বিশ্ব হিন্দু পরিষদের কেন্দ্রীয় মহামন্ত্রী শচীন্দ্রনাথ সিং, মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী, বিকাশ দেববর্মা, প্রণজিৎ সিংহ রায়সহ বিধায়ক, বিধায়িকা এবং বিশিষ্টজনেরা।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow