সুরজিৎ দত্ত থেকে সুনু দা,এক অধ্যায়ের পতন
অন্তিম বারের মত সুনু দার পিছু হাঁটল রামনগর
সুমন মহলানবীশ, দ্যা ফ্যাক্ট:-জনগণের প্রতি অগাধ ভালোবাসা, সেবা পরায়ণ মনোভাব এবং সোজাসাপ্টা কথাবার্তা বিধায়ক সুরজিত দত্ত থেকে সুনু দা কবে হয়েছিলেন হয়তো তিনি নিজেও জানতেন না। দীর্ঘ ৪০ দশকের রাজনৈতিক জীবনে বহু উত্থান পতন তার সামনে দিয়ে বয়ে গেছে। ৮ বার বিধায়ক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ৭ বার জয়ী হয়েছিলেন। জনপ্রতিনিধি হিসেবে জীবনে পরম কর্তব্য হিসেবে জনসেবাকে যিনি বেছে নিয়েছিলেন এই সুনু দা জনপ্রতিনিধির উপাধি কাধে নিয়েই বিদায় নিলেন জনগণের কাছ থেকে।
সুনু দত্তকে সামনে রেখে গোটা রামনগর আজ রাজপথে হাঁটলো। জনগণ ছিল, স্লোগান ছিল, মাইক ছিল। ছিলনা শুধু গেরুয়া রঙের জিপসিতে মাইক্রোফোন হাতে সুনু দা। যে সুনু দা প্রতিটা মিছিলে মাইক্রোফোন হাতে দলীয় কর্মীদের পরিচালনা করতেন সেই সনু দাকে আজ হাজার হাজার জনতা পরিচালিত করল অন্তিম গন্তব্যের দিকে। মনে হচ্ছিল এই রামনগর ছাড়তে চাইছেন না সুনু দত্ত। চিরনিদ্রায় শায়িত সুনু দাকে সামনে রেখে গোটা রামনগর এদিন অন্তিম বারের মত সুনু দার পিছু ধরল। এই পথে পথিক হয়েছিল বহু রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, সমর্থক এবং সুনু দত্ত্বের শুভা কাঙ্ক্ষীরা। দীর্ঘ প্রায় ৪০ বছর এলাকার মানুষের জন্ম থেকে মৃত্যু সবকিছুই সুনু দত্তের নখদর্পণে ছিল। কখনো মাফিয়া রাজের বিরুদ্ধে হুংকার দিতে দেখা গেছে। আবার কখনো রাজনৈতিক বিষয়ে গর্জে উঠেছিলেন। সবেতেই জনগণকে পাশে নিয়ে কাজ করেছিলেন তিনি। মানুষের বিপদের দিনে কতটা আন্তরিকতার সাথে পাশে দাঁড়ানো যায় তা দেখিয়ে দিয়েছিল সুনু দত্ত। একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের অন্তিম যাত্রায় সাধারনের চোখ দিয়ে ঝরা জল চিৎকার করে বয়ান করে এই নেতা, নেতা নয়। তিনি ছিলেন অভিভাবক। জনগণের প্রতি যে অধিকার নিয়ে কথা বলতেন সুনু দত্ত একই ভাবে জনগণ বুকে আগলে রেখেছিলেন নিজের বিধায়ককে। রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের সাথে এলাকার আপামর জনগণের এই সম্পর্ক রূপ নিয়েছিল পরম আত্মীয়তায়। অবশেষে ২৭ শে ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখ গভীর রাতে সমস্ত সম্পর্ক, আত্মীয়তা আবেগ এবং মায়া মমতা ছিন্ন করে চোখ বন্ধ করলেন সুনু দত্ত। আলবিদা জানালেন রামনগরকে। আলবিদা বললেন রাজ্য রাজনীতি এবং আপামর জনগণকে।
What's Your Reaction?