পোকা যুক্ত চাল ডাল শিশু এবং গর্ভবতী মায়েদের কপালে জুটল অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র থেকে
পোকা যুক্ত চাল ডাল শিশু এবং গর্ভবতী মায়েদের কপালে জুটল অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র থেকে
সুমন মহলানবীশ,দ্যা ফ্যাক্ট অফ ত্রিপুরা:-যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ওই দপ্তরের কর্মচারীদের ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা করেনা অথবা পরিসেবা নেয় না সেই দপ্তরের চাল-ডালের বস্তায় পোকা থাকাটাই স্বাভাবিক। কারণ গরিবের বাচ্চাগুলো অস্বাস্থ্যকর খাদ্য খেয়ে চিতায় উঠলেও রাজনীতি আর সরকারি ক্ষতিপূরণ যে নিশ্চিত প্রাপ্য। দীর্ঘদিনের পুরনো,পোকা বাসা বাঁধা এবং পুঁটলি পাকানো চাল অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র থেকে শিশু এবং গর্ভবতী মায়েদের সরবরাহ করাকে কেন্দ্র করে এই ধরনের ধারণা পোষণ করছেন সুবিধাভোগীরা।ঘটনা মোহনপুর সিডিপির অন্তর্গত বামুটিয়ার শংকর দাসপাড়া অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে।
বিভিন্ন অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের অন্তর্গত যে সমস্ত শিশুরা অঙ্গনারী কেন্দ্রে আসে না তাদেরকে বাড়িতে খাওয়ানোর জন্য পুষ্টিকর খাবার সরবরাহ করা হয় সমাজকল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা দপ্তরের অন্তর্গত অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র থেকে। যে পুষ্টিকর খাবার শিশুদের দৈহিক এবং মানসিক বিকাশে সহায়ক হবে। পাশাপাশি গর্ভবতী মহিলাদেরকেউ এই পুষ্টিকর খাবার সরবরাহ করা হয়। কিন্তু বামুটিয়ার ছোট আমতলী সংলগ্ন শংকর দাসপাড়া অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র থেকে যে ধরনের নিম্নমানের খাদ্য সামগ্রী শিশু এবং গর্ভবতী মায়েদের সরবরাহ করা হচ্ছে তা খেয়ে মরন যন্ত্রণায় কাতড়ানো ছাড়া আর কোন উপায় নেই শিশু এবং গর্ভবতী মায়েদের। যে চাল শূকর অথবা গাভীকে পর্যন্ত খাওয়ানো হয় না সেই ধরনের চাল শিশু এবং গর্ভবতী মায়েদের জন্য সরবরাহ করা হলো সমাজ কল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা দপ্তরের তরফে। মঙ্গলবার এই ধরনের ঘটনা সামনে আসতেই নড়েচড়ে বসে দপ্তরের আধিকারিকরা।
স্থানীয় অভিভাবক শিপুল দেবরায় অভিযোগ করেন যে চালে পোকা ধরেছে, যে চাল দীর্ঘদিনের পুরানো এবং চালে ছোট ছোট পুটলি বাঁধতে শুরু করেছে সেই চাল উনার সন্তানের জন্য দেওয়া হয়েছে শংকর দাসপাড়া অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র থেকে। স্বাভাবিক ভাবেই এই চাল খাওয়ার পর উনার সন্তানের দৈহিক অবস্থার অবনতি হওয়া সম্ভাবনা রয়েছে বলে দাবি করলেন তিনি। এই অঙ্গনওয়ারী কেন্দ্রের অন্তর্গত মোট ১২ জন শিশুকে বাড়িতে এই নিম্নমানের খাদ্য সামগ্রী সরবরাহ করা হয়েছে। পাশাপাশি একজন গর্ভবতী মাকেও এই নিম্নমানের খাবার সরবরাহ করা হয়েছে। প্রশ্ন উঠছে এই ধরনের নিম্নমানের খাবার খেয়ে যদি শিশু এবং গর্ভবতী মহিলা অসুস্থ হয়ে পরে তার দায়ভারকে নেবে। অভিভাবকদের আরও অভিযোগ গত মাসে ৮ টি ডিম বরাদ্দ থাকলেও দেওয়া হয়েছে ৭ টি ডিম। এই সমস্ত অনিয়মের বিষয়ে অঙ্গনারী কেন্দ্রের শিক্ষিকা খেলা রাণী দেব বলেন চাল ভিজে যাওয়ার কারণে এমন হয়েছে। এমনকি এই নিম্নমানের চাল অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে সরবরাহ করা হলেও তা শিশু এবং গর্ভবতী মায়েদের মধ্যে বিতরণ করার আগে তিনি দপ্তরকে অবগত করেননি বলে জানান। পাশাপাশি গত মাসে একটি করে ডিম কম দেওয়ার কারণ হিসেবে ডিমের মূল্য বৃদ্ধিকে দায়ী করলেন তিনি। নিয়ম অনুযায়ী অঙ্গনারী শিক্ষিকারা এই ডিম কিনে সরবরাহ করবে। পরবর্তীতে দপ্তর থেকে ৬ টাকা ৫০ পয়সা হিসেবে উনাদের দেওয়া হবে। কিন্তু সরকারে বরাদ্দের সাথে বাজারে ডিমের দর মিল না থাকায় এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান তিনি। গোটা বিষয়ে মোহনপুরের সিডিপিও দীপক চন্দ্র সরকার বলেন তিনি এই নিম্নমানের চাল সরবরাহ করার বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নন। তবে এই ঘটনা জানার পর তিনি নির্দেশ দিয়েছেন যাতে এই চাল সরবরাহ না করা হয়। তবে কি কারণে এই নিম্নমানের চাল সরবরাহ করা হয়েছে এই প্রশ্নে বৃষ্টিতে ভিজে যাওয়ার কারণকে দায়ী করলেন তিনি। প্রশ্ন উঠছে নিম্নমানের চাল সরবরাহ হলে তা শিশু এবং গর্ভবতী মায়েদের মধ্যে বন্টন করা কি বাধ্যতামূলক ছিল? এই চাল পরিবর্তন করে পরবর্তী সময়ে সরবরাহ করা সম্ভব হতো না? প্রশ্ন উঠছে এই নিম্নমানের খাদ্য সামগ্রী থেকে শিশু এবং গর্ভবতী মায়েরা অসুস্থ হলে তার দায়ভার নেবে তো সমাজকল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা দপ্তর?
What's Your Reaction?