গৃহবধূকে কুপ্রস্তাবের অভিযোগ বিধায়কের বিরুদ্ধে, পুলিশের অভিযোগ করল গৃহবধূ
দ্যা ফ্যাক্ট :- গৃহবধূকে আপত্তিকর প্রস্তাব দেবার অভিযোগ উঠল সিপিআই(এম) বিধায়ক নয়ন সরকারের বিরুদ্ধে। এই বিষয়ে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করলেন গৃহবধূ। অভিযুক্ত বিধায়ককে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করার দাবিতে মাঠে নামল মহিলা মোর্চা। ঘেরাও করা হয়েছে এয়ারপোর্ট থানা। বিজেপি বামুটিয়া মন্ডল কমিটির উদ্যোগে বামুটিয়ার কালী বাজারে অনুষ্ঠিত হয়েছে প্রতিবাদ মিছিল।
৩ নং বামুটিয়া বিধানসভা এলাকার বাম বিধায়ক নয়ন সরকার এক গৃহবধূ রিয়া দাস উরফে মুন রিয়া দাসকে আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন বলে অভিযোগ। এই বিষয়ে মঙ্গলবার রাতে এয়ারপোর্ট থানায় বিধায়কের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন গৃহবধূ। গৃহবধূ রিয়া দাস অভিযোগ করেন চলতি মাসের ৪ তারিখ উনার ফেসবুকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়েছেন নয়ন সরকার। ৫ তারিখ তিনি সেই ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট একসেপ্ট করেন। দুজনের মধ্যে শুরু হয় কথোপকথন। গৃহবধূ গান্ধীগ্রামে সুভাস কলোনী এলাকায় স্বামী এবং সন্তানের সাথে ভাড়া থাকেন। এরই মধ্যে দুজনের ফোন নাম্বার আদান-প্রদান হয়। শুরু হয় হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট। একপর্যায়ে বিধায়ক নয়ন সরকার গৃহবধূকে ত্রিপুরা পুলিশের চাকরি দেবার প্রলোভন দেখায়। তার বিনিময়ে গোয়াহাটিতে গিয়ে বিধায়কের সাথে শারীরিক সম্পর্ক করার প্রস্তাব দেয় বলে অভিযোগ বিধায়কের বিরুদ্ধে। এই বিষয়টি প্রত্যাখ্যান করেন গৃহবধূ। বিষয়টি জানতে পারে তার স্বামী মানষ রায়। শুরু হয় প্রতিবাদ। এ বিষয়ে বিধায়ককে মানষ ফোন করে তীব্র প্রতিবাদ জানায়। তার পরিবর্তে বিধায়ক উনাদেরকে হুমকি দেয় বলে অভিযোগ। ৯ তারিখ দুই পক্ষের মধ্যে সর্বশেষ কথা হয়। তারপর রিয়া এবং তার স্বামীর মোবাইল নাম্বার নয়ন সরকার ব্লক করে দেয়। তার কিছুক্ষণ পরেই বিধায়ক নয়ন সরকার উনার ফেসবুক প্রোফাইলে পোস্ট করেন উনার হোয়াটসঅ্যাপ হ্যাক হয়েছে। কিন্তু এই বিষয়ে পুলিশের অভিযোগ করেননি। ১০ তারিখ দুপুরে সামাজিক মাধ্যমে এই বিষয়টি প্রকাশ করেছেন গৃহবধূ। তার পাশাপাশি বিধায়কের সাথে উনার চ্যাটিংয়ের স্ক্রিনশট পোষ্ট করা হয়। শুরু হয় জোর জল্পনা। এদিন বিকেলেই তড়িঘড়ি বিধায়ক নয়ন সরকার পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন উনার বিরুদ্ধে কুৎসা রটানো হচ্ছে বলে। এখানেই উঠছে প্রশ্ন। যদি বিধায়কের হোয়াটসঅ্যাপ হ্যাক হয়ে থাকে তাহলে ২৪ ঘন্টা অতিবাহিত হলেও কেন তিনি পুলিশে অভিযোগ করলেন না? গৃহবধূ সামাজিক মাধ্যমে অভিযোগ করার পর কেন পুলিশের দ্বারস্থ হলেন বিধায়ক? মঙ্গলবার গভীর রাতে এয়ারপোর্ট থানাতে বিধায়কের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেন গৃহবধূ। পুলিশে অভিযোগ দায়ের করার পাশাপাশি দেওয়া হয়েছে দু পক্ষের কনভার্সেশনের স্ক্রিনশট। যাতে হোয়াটসঅ্যাপ প্রোফাইলে ছবি রয়েছে নয়ন সরকারের। এরপরই হোয়াটসঅ্যাপ প্রোফাইল থেকে নিজের ছবি সরিয়ে দিলেন বিধায়ক নয়ন সরকার।
মহিলা মোর্চার উদ্যোগে বুধবার এয়ারপোর্ট থানা ঘেরাও করা হয়। দাবি করা হয় অভিযুক্ত বিধায়ক নয়ন সরকারকে অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে। পুলিশ আশ্বাস দেয় আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি গ্রেফতার করা হবে নয়ন সরকারকে। তারপরেই ঘেরাও মুক্ত করা হয় এয়ারপোর্ট থানা। এই ঘেরাও কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন মহিলা মোর্চার রাজ্য সম্পাদিকা সোমা দাস সেন, মহিলা মোর্চার সদর গ্রামীণ জেলা কমিটির সম্পাদিকা রিংকু দত্ত, জেলা পরিষদের সদস্যা শিলা দাস সেন, মন্ডল সভাপতি শিবেন্দ্র দাস, প্রাক্তন বিধায়ক কৃষ্ণ ধন দাস সহ অন্যান্যরা।
What's Your Reaction?






