ত্রিপুরার কুমারঘাটে উল্টো রথে হাঁটতে গিয়ে জীবন গেল ৭ জনের, চুরান্ত গাফিলতির কারণেই কি এই দুর্ঘটনা ?
রথযাত্রাকে কেন্দ্র করে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে জীবন্ত বশীভূত হওয়ার ঘটনায় স্তব্ধ ত্রিপুরা
দ্যা ফ্যাক্ট ব্যুরো জগন্নাথের রথের দড়ি টানতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে প্রাণ হারালেন ৭ জন। এর মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছেন আরও ৫ জন। আহত রয়েছেন ১৬ জন। এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠছে ৩৩ কেভি বিদ্যুৎ পরিবাহি তার এত নিচে এলো কিভাবে অথবা রথের চূড়া এত উঁচু হলো কিভাবে?
কুমারঘাট ইসকন আয়োজিত উল্টো রথে গাঁ ভাসাতে গিয়ে এভাবে জীবন ভাসাতে হবে তা হয়তোবা কল্পনাই করতে পারেনি কেউই । বুধবার বিকেল আনুমানিক সাড়ে চারটা নাগাদ বের হয় কুমারঘাট ইসকন আয়োজিত উল্টো রথ।
জাতীয় সড়ক ধরে এগিয়ে যাওয়ার সময় ঘটে এই দুর্ঘটনা। রাস্তার ওপর থাকা ৩৩ কেভি বিদ্যুৎ পরিবাহি তারের সাথে সংস্পর্শ হয় রথের চূড়ার। রথের লোহার স্ট্রাকচারে যারাই ধরে রেখেছিলেন এরমধ্যে ঘটনাস্থলে ছয় জন নিমিষের মধ্যে আগুনে পুড়ে ভস্মীভূত হয়ে যান। গুরুতর আহত হয়েছেন আরও অনেকেই। আহতদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে কুমারঘাট হাসপাতাল,ফটিকরায় হাসপাতাল এবং কৈলাশহর হাসপাতালে। এরমধ্যে ৬ জনকে জিবিপি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। জিবিতে আসার পথে প্রাণ হারান আরও ১-জন। ঘটনাস্থলে নিহতরা হলেন সীমা পাল (৩৩), সুস্মিতা বৈদ্য (৩৩), রূপক দাস (৪০), সোমা বিশ্বাস (২৮), রোহন দাস (৯) এবং শান মালাকার (৯)। আহতদের দেখতে এবং ঘটনাস্থলের খোঁজখবর নিতে কুমারঘাটে ছুটে যান রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ডঃ মানিক সাহা।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে যে বিষয়টি সামনে আসছে তা হল হয়তো বিদ্যুৎ পরিবাহী তার নির্দিষ্ট উচ্চতার চাইতে নিচে ছিল অথবা রথের চূড়া প্রয়োজনের চাইতে অনেকটাই উঁচুতে ছিল। কিন্তু ঘটনাস্থলের ছবিতে দেখা যাচ্ছে রথ এবং চূড়ার উচ্চতা প্রায় স্বাভাবিক। রথের চূড়ার সাথে বিদ্যুৎ পরিবাহি তার প্রায় লেগে আছে। স্থানীয় সূত্রের খবর এই এলাকাতে জাতীয় সড়ক নির্মাণের সময় মাটি ফেলে রাস্তা উঁচু করা হয়েছে। পূর্বে রাস্তাটি অনেকটাই নিচুতে ছিল। কিন্তু মাটি ফেলে রাস্তার উচ্চতা বাড়ানোয় বিদ্যুৎ পরিবাহী তারের সাথে মাটির দূরত্ব অনেকটাই কমে গিয়েছে। প্রায় এক বছর হলেও এখনও পর্যন্ত বিদ্যুৎ দপ্তর এই এলাকার ৩৩ কেভি বিদ্যুৎ পরিবাহি তারগুলো সঠিক উচ্চতায় নিয়ে যায়নি বলে খবর। যার ফলে এদিনের এই দুর্ঘটনাটি সংঘটিত হয়েছে। অন্যদিকে রথযাত্রাকে কেন্দ্র করে পরিচালন কমিটির পক্ষ থেকেও স্থানীয় বিদ্যুৎ দপ্তরে আবেদন করতে হয় যে পথ ধরে রথ এগিয়ে যাবে সেই সমস্ত রাস্তায় সেই সময়টুকুর জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখার। এই ক্ষেত্রে ইসকন কর্তৃপক্ষ এই নিয়ম পালন করেছে কিনা সেটাও দেখার বিষয়। যদি নিয়ম পালন করে থাকে তাহলে বিদ্যুৎ নিগমের কোন গাফিলতি রয়েছে কিনা তা এখন তদন্ত সাপেক্ষ। প্রাথমিকভাবে এই দুর্ঘটনার পেছনে কোনও না কোনও
খামখেয়ালীপনা অথবা দায়িত্বহীনতার দিকেই মোর নিচ্ছে বিষয়টি। প্রয়োজন সঠিক তদন্তক্রমে দোষীদের চিহ্নিত করে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
What's Your Reaction?