পায়ে পচন যন্ত্রণা, ভিক্ষাবৃত্তি করে ক্ষুধা নিবারণ যুবকের, চিকিৎসার অভাবে পা খসে পরা সময়ের অপেক্ষা!
আগরতলা শহরে রাস্তার পাশে পায়ে ক্ষত নিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করে বেঁচে থাকা যুবকটি চিকিৎসার অভাবে প্রতিদিন মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে
সুমন মহলানবীশ,দ্যা ফ্যাক্ট ব্যুরো:-পায়ে পচন ধরা অবস্থায় ভিক্ষাবৃত্তি করে বেঁচে থাকার শেষ লড়াইটুকু জারি রেখেছে অনির্বাণ গোস্বামী। জীবন যুদ্ধে হেরে যাওয়ার আগে ক্ষুধার জ্বালা নিবারণ করতে একমাত্র পথে বসে হাত পাতা ছাড়া আর কোন অবলম্বন নেই তার। চিকিৎসার অভাবে একটি পা শুধুমাত্র খসে পড়ার অপেক্ষা। প্রয়োজন উপযুক্ত চিকিৎসা। প্রয়োজন সহানুভূতি। প্রয়োজন সরকারি সুযোগ তার কাছে পৌঁছে দেওয়া। আগরতলা শহরের বিভিন্ন পথে অসহায় অনির্বাণ এক পরিচিত মুখ হয়ে উঠেছে আজ।
একবার ভাবলেই গা শিউরে ওঠে। চিকিৎসার অভাবে, আর্থিক অসচ্ছলতায় প্রতিদিন গুটি গুটি পায়ে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এক তরতাজা যুবক। আগরতলা শহরে শকুন্তলা রোড, সেন্ট্রাল রোড, বটতলা এ সমস্ত এলাকায় প্রতিদিন রাস্তার পাশে বসে হাত পেতে ভিক্ষা করতে দেখা যায় এই যুবককে। দূর থেকে তরতাজা যুবকের ভিক্ষাবৃত্তি দেখে রাগে ফোষা স্বাভাবিক। সামান্য কাছে গিয়ে তার পায়ের পচন অবস্থা দেখে হতবাক পথচারীরা। ডান পায়ে হাঁটুর নিচে প্রায় বেশিরভাগ অংশই বীভৎস ঘা হয়ে আছে। শুরুতে জিবিপি হাসপাতালে চিকিৎসা করালেও অর্থের অভাবে চিকিৎসা পরিষেবা জারি রাখতে পারেনি অনির্বাণ। বাবা-মা, পরিবারের অন্য কেউ না থাকার কারণে বেঁচে থাকার জন্য ভিক্ষাবৃত্তি তার কাছে একমাত্র অবলম্বন বলে জানায় অনির্বাণ। শুরুতে চিকিৎসা পরিষেবা নেওয়ার ক্ষেত্রে তেমন কোনো সমস্যা হয়নি তার। কিন্তু যখন পায়ের ক্ষতের পরিমাণ বাড়তে থাকে একদিকে চিকিৎসার খরচ অন্যদিকে কর্মহীনতায় ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়ে সে। অবশেষে গতরের জ্বালাকে উপেক্ষা করে পেটের জ্বালা নিবারণে পথে নামতে বাধ্য হলো অনির্বাণ। প্রতিদিন হাত পেতে মানুষের কাছ থেকে খাবার অথবা নগদ অর্থ নিয়ে বেঁচে থাকতে লড়াই করছে এই যুবক। অথচ এই বেঁচে থাকার প্রয়াসের মধ্য দিয়েই প্রতিদিন মৃত্যুর দিকে গুটিগুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছে সে। অর্থের অভাবে ঠিকভাবে চিকিৎসা পরিষেবা নেওয়া একেবারেই বন্ধ হয়ে গেছে বলে জানাই অনির্বাণ। সরকারি চিকিৎসা পরিষেবা তার হাতের নাগালে পৌঁছে দেওয়া হলে অকালে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসতে পারে সে। প্রয়োজন রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে তাকে বাঁচিয়ে রাখতে উপযুক্ত চিকিৎসা পরিষেবা তার কাছে পৌঁছে দেওয়া। অতি সত্যর রাষ্ট্র এই উদ্যোগ গ্রহণ না করতে পারলে হয়তো একদিন প্রশ্ন উঠবে অনির্বাণ গোস্বামী এই রাষ্ট্রে বোঝা হয়েই মৃত্যুবরণ করতে কি এসেছিল?
What's Your Reaction?